মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ! এবার একটু আরাম করার পালা। তবে এই অবসর সময়টাকে পুরোপুরি নষ্ট না করে, সঠিক ভাবে ব্যাবহার করে ভবিষ্যৎকে সুদৃঢ় করা সম্ভব।
নিচে কয়েকটি উপায় আলোচনা করা হলো, যা এই সময়কে সার্থক করতে সাহায্য করবে।
১) নিজের পছন্দের কাজ:-
এই সময়টাতে তোমার পছন্দের জিনিস, যেগুলো করতে তোমার ভালো লাগে সেগুলো করতে পারও।
যেমন, বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা, ছবি আঁকা, কন্টেন্ট তৈরি করা বা কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখা, গল্পঃ বা কবিতা লেখা প্রভৃতি।
২) নতুন কিছু শেখা:-
মাধ্যমিক পরীক্ষার পরের ছুটি নতুন কিছু শেখার জন্য একদম আদর্শ সময়।
• কম্পিউটার শেখা:
বর্তমানে কম্পিউটার আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
তাই আমাদের প্রত্যেকের কম্পিউটারে ব্যাবহার সম্পর্কিত দক্ষ থাকা আবশ্যক।
এই ছুটিতে 3-6 মাসের সার্টিফিকেট বা ডিপ্লোমা কোর্স করা উচিত।
• ভাষা শেখা:
বর্তমানে English প্রতিটি জায়গায় ব্যবহৃত হওয়া ইন্টারন্যাশনাল ভাষা।
তাই ইংলিশে কারোর সাথে কনভারসেশন করার জন্য Spoken English শেখা যেতে পারে অনলাইন বা অফলাইন থেকে।
তার সাথে আমাদের ভারতীয়দের কাছে Hindi ও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভাষা, এটায় শেখা যেতে পারে এর সাথে।
• ক্রিয়েটিভ কোর্স:
চিত্রাঙ্কন, সঙ্গীত, নৃত্য বা ফটোগ্রাফির মতো কোনো সৃজনশীল বিষয়, যেটার মধ্যে তোমার আগ্রহ আছে সেটার উপর কোর্স করে নিজেকে নতুন দক্ষতায় সমৃদ্ধ করতে পারো।
৩) নতুন অভ্যাস গড়ে তোলা ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা:-
পরীক্ষার সময় অনেকেই স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত বিকাশের দিকে সেভাবে মনোযোগ দিতে পারে না। তবে ছুটির এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে কিছু ভালো অভ্যাস তৈরি করা সম্ভব, যা ভবিষ্যতে অনেক সহায়ক হবে।
• শরীরচর্চার অভ্যাস গড়ে তোলা:
নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকে। প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট হাঁটা, দৌড়ানো বা যোগব্যায়াম করলে শারীরিক ও মানসিক শক্তি বাড়বে।
মেডিটেশন করলেও শরীর ও মন উভয়ই সুস্থ থাকে।
• জ্ঞান বাড়াতে বই পড়া:
শুধু পাঠ্য বই নয়, বরং বিভিন্ন ধরনের সাহিত্য, জীবনী, বিজ্ঞান ও ইতিহাসের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিৎ। এতে চিন্তার গভীরতা বাড়বে এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হবে।
• দিনলিপি লেখা:
নিজের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, নতুন শেখা বিষয় বা চিন্তাগুলো লিখে রাখার অভ্যাস করলে আত্মউন্নতি সহজ হবে। এটি ভবিষ্যতে লেখার দক্ষতাও বাড়াবে।
৪) ভ্রমণ ও নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন:-
মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে ছুটিতে ভ্রমণ একটি দারুণ উপায় হতে পারে মানসিক বিশ্রাম ও নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য। শুধু আনন্দের জন্য নয়, বরং শেখার জন্যও ভ্রমণ গুরুত্বপূর্ণ।
ছুটির সময় ঘরে বসে না থেকে কাছের বা দূরের কোনো নতুন জায়গা ঘুরে আসলে মনের ক্লান্তি দূর হবে, নতুন কিছু শেখার সুযোগ তৈরি হবে এবং স্মৃতিতে চিরস্থায়ী কিছু অভিজ্ঞতা যুক্ত হবে।
৫) বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো:-
পরীক্ষার ব্যস্ততার মধ্যে অনেকেই পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারে না। তাই এই ছুটিকে ব্যবহার করে তাদের সঙ্গে মধুর সময় কাটাতে পারো।
৬) ভবিষ্যতের পরিকল্পনা:-
অনেকেই মাধ্যমিকের পর কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করবেন তা নিশ্চিত নন।
এই সময়ে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য খোঁজখবর নিতে পারো কোনো সিনিয়র দাদা/দিদি, টিচার বা কোনো কেরিয়ার কাউন্সেলরের সাথে কথা বলে নিজের আগ্রহ ও দক্ষতা অনুযায়ী সঠিক পথ বেছে নিতে পারো।
তোমরা চাইলে ইন্টারনেট এর সাহায্য নিতে পারো।
মনে রাখবে,
মাধ্যমিকের পর ছুটির সময়টা অমূল্য, যদি সেটাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাও তবে নিশ্চয়ই ভবিষ্যতে অনেক উপকার পাবে তোমরা।
শুধু বিনোদনের জন্য সময় নষ্ট না করে, পড়াশোনা, দক্ষতা অর্জন এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিলে এই সময়টা জীবনের অন্যতম কার্যকর সময় হয়ে উঠবে।

